আজ স্বাস্থ্য ক্যাডার বাতিল করতে সুপারিশ করবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। বিসিএস শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডার বাতিলসহ শতাধিক সুপারিশ থাকার কথা এই প্রতিবেদনে। ক্যাডারভুক্তির বিপরীতে এ দুটি খাতকে জুডিশিয়াল সার্ভিসের মতো আলাদা করার প্রস্তাব দেওয়ার কথা রয়েছে।

প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগে গতকাল মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে শেষবারের মতো সভা করেন কমিশনের সদস্যরা।

সভা শেষে কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী শতাধিক সুপারিশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। এর বেশি কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি। তবে সংস্কার কমিশনের সদস্যসচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর সেটি হবে পাবলিক ডকুমেন্ট। ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে, সবাই জানবেন।

এর আগে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ক্যাডার বাতিলের সুপারিশ করা হবে কমিশন থেকে। ওই সময়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা ক্যাডারটা অযৌক্তিক। স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা আলাদা। আমরা সুপারিশ করেছি এটি ক্যাডার করে রাখা যাবে না। একজন চোখের ডাক্তার, একজন দাঁতের ডাক্তার, একজন জেনারেল ফিজিশিয়ান; তারা কি পদোন্নতি একসঙ্গে পাচ্ছে? সেজন্য আমরা বলছি এটি ক্যাডার রাখা যাবে না, এটি আমাদের চিন্তা।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি ক্যাডার করা অযৌক্তিক হয়েছে। এগুলোকে আলাদা করতে হবে। বেতন বাড়িয়ে দেওয়া হবে। এই দুই বিভাগ ছাড়া বাকি সবাই ক্যাডার থাকবে।’

ওই দিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘আপনাদেরকে একটা খবর দিতে চাই, পাবলিক সার্ভিস কমিশন থেকে সরে যেয়ে আমাদের জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন আলাদা হয়েছে। ঠিক এরকম আমরা স্বাস্থ্য ক্যাডারকে আলাদা করার পরামর্শ দিয়েছি এবং শিক্ষা ক্যাডারকে আলাদা করার পরামর্শ দিয়েছি। এটা হয়ে যাবে।’

বর্তমানে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীন তিন ধাপের নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ২৬টি ক্যাডারে নিয়োগ হয়। চাকরিপ্রার্থীদের পছন্দক্রম ও পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ক্যাডার নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে কর্মকর্তাদের সংখ্যার দিক দিয়ে বিসিএস শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বড় ক্যাডার। শিক্ষা ক্যাডারে কর্মকর্তা প্রায় ১৬ হাজার। আর স্বাস্থ্য ক্যাডারের সদস্য ৩০ হাজারের বেশি।

আরও পড়ুন  মুমূর্ষু রোগীদের জীবন বাঁচাতে ক্রিটিক্যাল কেয়ার স্থাপনের দাবী

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ক্যাডার থেকে আলাদা করা হলেও উপসচিব পর্যায়ে পদোন্নতির পরীক্ষায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের কর্মকর্তারাও যাতে অংশ নিতে পারেন, সে রকম সুপারিশও থাকছে।

এদিকে স্বাস্থ্য ক্যাডার বাতিলের সুপারিশ করা হবে এমন ঘোষণায় ১৮ ডিসেম্বর প্রতিবাদ জানায় বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন। স্বাস্থ্যের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অনভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করে সংগঠনটি। সংগঠনটির আহ্বায়ক ডা. মোহাম্মদ নেয়ামত হোসেন ও সদস্য সচিব ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘এরূপ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও জনগণের প্রান্তিক পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিতে পারে।’

 

সূত্র: মেডি ভয়েস

0Shares